“হা হা। বুঝি আমি সুন্দরী কিন্তু কতটা বুঝি না!”
“একটু আপনার আশেপাশের পুরুষদের চোখে ভাষা পড়ে দেখুন। বুঝে যাবেন!”
“কবির মত কথা বলো না তো, বারুদ! আমি কিশোরী হলে তো পটেই যেতাম তোমার কথায়!”
“সেটা আমার বিশাল সৌভাগ্য হত!”
সাইন্সল্যাবে এসে সিএনজি আটকা পড়ল জ্যামে। বিশ্রি অবস্থা। আমাদের সিএনজির পাশে একটা বোটকা মহিষের মত ট্রাক থেমে কালো ধোঁয়া ছাড়ছে। এমন ট্রাকের রোড পারমিশন থাকাই উচিত নয়। তাও চালিয়ে যাচ্ছে অলস আর দুর্নীতিবাজ কিছু আমলা আর সরকারি চাকুরের কারণে।
দেখলাম, ফারজানার মুখ লাল হয়ে গেছে। দরদর করে ঘামছেন। ভাগ্যিস ট্রাকটা একটু ফাঁক পেয়ে সামনে চলে গেল! না হলে দম বন্ধ হয়ে মরতেন এখানেই!
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, “এই, আপনি ঠিক আছেন তো?”
কপালের ঘাম মুছে বললেন, “হ্যাঁ। ঠিক আছি। এসবের কারণেই ঢাকা আসতে ইচ্ছে করে না, জানো?”
এর জবাবে কিছু বলার নাই। শহরটা আসলেই নরকে পরিণত হয়েছে। অনেকটা ব্যাটম্যানের “গোথাম” এর মত।
আমি পকেট থেকে টিস্যুপেপার বের করে সাহস করে তার কপালের ঘামটুকু মুছে দিলাম। ফারজানা বাঁধা দিল না। তার গলায় কয়েক ফোঁটা ঘাম। ইচ্ছে হলো, টিস্যু দিয়ে মুছে দেই। কিন্তু খুব বেশি হয়ে যাবে ভেবে দিলাম না।
জ্যাম ছাড়তেই ফারজানা বললেন, “তোমার প্রেমিকা খুব হ্যাপি হবে!”
হঠাত প্রেমিকার কথা বললেন কেন জিজ্ঞেস করতেই বললেন, “যেভাবে ঘমটা মুছে দিলে! অনেক কেয়ারিং তুমি!”
বললাম, “আপনার মত কেউ পাশে বসলে যে কেউ কেয়ারিং হতে পারে, ম্যাম!”
লজ্জা পেয়ে বললেন, “যাহ। আর বলো না তো!
আমরা নিউ মার্কেটে এসে গেলাম। প্রচণ্ড ভীড়। পা ফেলার জায়গা নেই। আমি খুব দরকার না হলে নিউমার্কেটে আসি না। কথায় আছে, সুন্দরীর দোহাই, বড় দেনা। না এসে পারলাম না।
অনেক ঘুরে অনেক ভীড় ঠেলে, এর ওর গায়ে পড়ে ঘণ্টাদুয়েক হতাশ ঘুরে ফারজানা একটা শাড়ি, এক জোড়া কানের দুল, একটা নেইল কাটার আর একটা বেড শিট কিনলেন। আমরা চালতার আঁচার খেলাম ভীড়ে নিউমার্কেটের ওভার ব্রিজের নিচে দাঁড়িয়ে।
তারপর তিনি আমাকে বললেন, “তুমি এখানে দাঁড়াও, আমি আসছি!”
বললাম, “কোথায় যাচ্ছেন? অনেক ভীড়। পরে আমাকে খুঁজে পেতে আপনার সমস্যা হবে!”
“যেখানে যাচ্ছি সেখানে তোমাকে নিয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে কিনা ভাবছি। আচ্ছা চলই না! আর আমি এসব জায়গা চিনিও না!”
বললাম, “কোথায় যেতে চাচ্ছেন বলুন তো!”
লাজুক হেসে, গোপন কথা বলার মত করে বললেন, “আচ্ছা, ব্রা কোথায় পাওয়া যায়, জানো?”
আমি হেসে বললাম, “জানব না কেন? আমি আমার গফকে নিয়ে আগেও এসেছি। আর আমার যাওয়া নিয়ে কোন প্রব্লেম নেই। ছেলেরাও সেসব দোকানে সাথে যেতে পারে।”
বলেই আমি হাঁটা দিলাম। ফারজানা আমাকে ফলো করা শুরু করলেন।
চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের ২য় তালায় অনেকগুলা ব্রা’র দোকান। ঢুকে পড়লাম সেগলোর একটায়। দোকানটায় কোন মেয়ে নেই। পুরুষই বিক্রি করে এসব। ফারজানার দেখলাম, সেসব নিয়ে সমস্যা নেই।
দোকানদারকে বললেন, “৩৬ সাইজে ব্রা দাওতো!”
আমি তার একদম পাশেই গা ঘেষে দাঁড়িয়ে ছিলাম পিছনে। আমি তার চেয়ে লম্বা বলে পিছন থেকে তার স্তনের খাঁজ দেখতে পাচ্ছি। সুগভীর একটা খাদ যেন। একটা লকেট স্তনের খাঁজে আটকে আছে। দোকানের উজ্জ্বল আলোয় সাইন করছে লকেটটা।
দোকানদার বললেন, “সাধারণ ব্রা না স্পোর্টস ব্রা দেব, ম্যাম? আপনাকে স্পোর্টস ব্রা খুব মানাবে, ম্যাম!”’
আমি ফারজানাকে বললাম পিছন থেকে, “স্পোর্টস ব্রা কি?”
আমার দিকে ঘুরে বললেন, “খেলোয়াররা যেসব ব্রা পরে। মারিয়া সারাপোভা, সানিয়া মির্জা এরা পরে।”
আমি এই সুযোগে ওর সুস্পষ্ট স্তনের দিকে চোখ রেখে বললাম, “আসলেই আপনাকে মানাবে। স্পোর্টস ব্রাই কিনুন!”
দোকানদার তাকে দুই জোড়া স্পোর্টস ব্রা দিল ট্রায়াল দেয়ার জন্য। ফারজানা ট্রায়াল রুমে গিয়ে পরে দেখে ফিরে এসে বললেন, “হচ্ছে না। সাইজ মিলছে না!”
দোকানদার বললেন, “আপনার সাইজটা আরেকবার মেপে দেখব, ম্যাম?”
ফারজানা মাথা ঝুঁকিয়ে সমর্থন দিল।
দোকানদার ফারজানার পিছনে গিয়ে ফিতা দিয়ে মাপ দিলে ফারজানার স্তন। পুরো সময়টা ফারজানা মাথা নিচু করে ছিলেন। আমি দেখলাম, মাপ নেয়ার সময় দোকানদার ওর স্তন দুই একবার ইচ্ছে করেই ছুয়ে দিল। ওর হাত আঙ্গুল ফারজানার স্তনের মাংশে ডুবে গিয়েছিল কয়েক ন্যানো সেকেন্ডের জন্য। স্পষ্টই দেখলাম। ফারজানা কিছু বললেন না এতে। মুখেও কোন বিরক্তির ছাপ নেই। হয়ত কিছু বলে তিনি সিন ক্রিয়েট করতে চাননি।
আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আচ্ছা, কোন রঙের কিনি বলতো?”
আমি কাছে গিয়ে কানের কাছে বললাম, “যে দেখবে, তাকেই জিজ্ঞেস করুন না!”
ফারজানা আমাকে ধাক্কা দিয়ে বললেন, “খুব দুষ্ট হয়েছো! আমাদের বিয়ের কত বছর হলো জানো? এখন তাকে ফোন দিয়ে যদি জিজ্ঞেস করি, কোন রঙের ব্রা কিনব, তিনি তো হেসেই খুব হয়ে যাবে!”
কপট সমবেদনা জানিয়ে বললাম, “ইসস! আপনি আমার স্ত্রী হলে, আপনার জন্য আমি নিজেই ব্রা কিনে নিয়ে গিয়ে পরিয়ে দিতাম! আপনার ভাগ্যটা ভাল না জানেন! আমি আরেকটু বড় হলে, আপনার জীবনটা আরো সুখের হত!”
ফারজানা অনেকটা হুকুম করে বললেন, “হুম। অনেক কিছু ভাবছো দেখছি ইদানিং। তাড়াতাড়ি বলো, কোন কালারের ব্রা কিনব!”
আমি আবার তাকালাম ফারজানার সুপুষ্ট স্তনের দিকে। আমি ওর একবারেই কাছে, তিনি নিজেও বুঝতে পারছে আমি ওর স্তন দেখছি। বললাম, “আপনি ফর্সা অনেক। কালো ব্রা’ই কিনুন!”
দোকানদার এতক্ষণ আমাদের কথায় কান পেতে ছিল, আমরা কেউই বুঝতে পারিনি। তিনি বললেন, “আচ্ছা ম্যাম, কালো ব্রা’ই দিচ্ছি তবে!”
দোনাকদারের ঠোঁটে অশ্লীল এক হাসি। ফারজানা লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকাল।
আমরা ব্রা নিয়ে বেড়িয়ে এলাম।
বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে এলাম আমরা কলেজ স্ট্রিট পর্যন্ত। হঠাত ফারজানা বললেন, “আচ্ছা, তুমি সিগারেট খাও সেদিন দেখলাম। আজ খাচ্ছো না যে?”
বললাম, “সুন্দরী কোন নারী পাশে থাকলে, কেই বা সিগারেট খেতে চায়!”
ফারজানা হেসে মাথার চুলে হাত বুলিয়ে বললেন, “আহা। মন ভরে গেল শুনে! খাও না একটা সিগারেট। আমার সিগারেটের ঘ্রাণ খুব ভাল লাগে!”
বললাম, “তাই নাকি! প্রথম কোন নারীকে এই কথা বলতে শুনলাম! তা গন্ধ শুঁকবেন কেন? নিজেই টেনে দেখুন না!”
“আরে নাহ! কে কী বলবে দেখে!”
“কে আপনাকে চেনে এখানে? আর ঢাকার মেয়েরা প্রচুর স্মোক করে। আমার এক বান্ধবী তো গাঁজা পর্যন্ত খায়! ওরা পারলে আপনি পারবেন না কেন?”
ফারজানা আমার যুক্তি শুনে রাজী হলেন। সাধারণত আমি গোল্ডলিফ খাই। বাংলাদেশে গোল্ডলিফের চেয়ে ভাল সিগারেট নেই অন্তত। কিন্তু এত কড়া সিগারেট খাওয়ানো যাবে না ফারজানাকে। তাই আমি গোল্ডলিফ ধরিয়ে তার মুখে একটা ব্লাক ধরিয়ে দিলাম। ব্লাক খুব হালকা সিগারেট। তামাকের চেয়ে সেটায় তেজপাতার ফ্লেভার বেশি।