বিয়ের বাগদান হওয়ার পরেই যদি ওর বিয়ে ভেঙ্গে যায়, তাহলে সেটা ওদের পরিবারের জন্যে একটা বড় আঘাত হবে, আর ওদের পুরো পরিবারে এমনকি ওদের বংশে ও কোন ছেলে বা মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ বা বাগদানের পড়ে বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার কোন রেকর্ড আজ পর্যন্ত নাই, সেদিক থেকে বেশ বড় রকমের একটা বাঁধা আছে জুলির জন্যে, কিন্তু রাহাতের সাথে যদি সম্পর্ক ছেদ করতে হয়, সেটা জুলির নিজের জন্যে ও প্রচণ্ড রকমের একটা আঘাত হবে, কারণ, জুলি প্রচণ্ড রকম ভালোবাসে আর বিশ্বাস করে রাহাতকে। সেটা জুলির স্বভাব বলেই করে না, রাহাত এই যোগ্যতা আর সম্মানের আসনে নিজেকে নিজের গুনেই ওর সামনে উপস্থাপন করতে পেরেছে বলেই করে। তাই মানুষ হিসাবেও রাহাত অনেক উঁচু মাপের, তাই ওকে কষ্ট দেয়া বা ছেড়ে চলে যাওয়া কোনটাই জুলির পক্ষে একদম সম্ভব না। এইবার জুলি ভাবতে লাগলো, যদি রাহাতের এই বিকৃত কামনার খোরাক হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করে জুলি, তাহলে ওর কি ক্ষতি? না, না, কোন ক্ষতিই তো ভেবে পাচ্ছে না সে। একটা মাত্র ব্যাপার আছে, সেটা হচ্ছে সমাজের চোখে হেয় হয়ে যাওয়া, কিন্তু আজকালকার এই ঘুনে ধরা নিষিদ্ধ পাপে ভরা সমাজে, ওর জীবনকে এতো বেশি করে ফোকাস করে দেখার সময় কার আছে? বা কেউ যদি ওদের ব্যাক্তিগত জীবনে বেশি নাক গলায় তার নাক কেটে মাথা মুণ্ডন করে ওকে গাধার পিঠে বসিয়ে দেয়ার ক্ষমতা জুলি ও তার পরিবারের ভালোই আছে। তাই, জুলির দিকে থেকে এই মুক্ত বিবাহিত জীবনের সম্পর্কে রাহাতের সাথে জড়ালে, সেখানে ওর লাভ ছাড়া ক্ষতির বিন্দুমাত্র কোন সম্ভাবনা নেই। জুলি বিষদ ভাবনা চিন্তা করতে লাগলো এইসব নিয়ে।
জুলি এইসব নিয়ে ইন্টারনেটে বিস্তারিত লেখাপড়া করতে লাগলো, রাহাতের এই মানসিক অবস্থার নাম ইংরেজিতে troilism,, যার মানে হচ্ছে নিজের যৌন সঙ্গীকে অন্য কোন তৃতীয় পক্ষের সাথে যৌন ক্রিয়া করতে দেখে নিজে যে যৌন তৃপ্তি পায়, সেটা। রাহাতের মানসিক অবস্থাকে ও এটাই বলা যায়। আর এটা দেখে সে নিজে যা পায়, সেটাকে ইংরেজিতে বলে Compersion, এর মানে হচ্ছে যখন নিজের যৌন সঙ্গী বাইরের কোন উৎস থেকে যৌন সুখ পায় সেটা দেখে নিজে এক প্রকার সহানুভূতিশীল সুখ আর আনন্দের অনভুতি মনের ভিতর পাওয়া। রাহাত সেই Compersion পাওয়ার জন্যেই ওর ভিতরে এখন সেই Troilism কাজ করছে। ইন্টারনেটে এসব বিষয়ে প্রচুর লেখা, ছবি, ভিডিও পেলো, এইগুলি দেখতে দেখতে যেন জুলি ধীরে ধীরে রাহাতের মনটাকে বুঝে নিতে পারছিলো। এই ধরনের অনেক কিছু সংজ্ঞা সে জানতে পারলো যেগুলি এই Cuckoldry এর সাথে সম্পর্কিত, সে আরও জানতে পারলো যে Cuckold ব্যাক্তি নিজের Humiliation বা অপমান থেকে নিজের সুখ খুঁজে বের করে নেয়। অনেক সময় এটা নিজের যৌন সঙ্গীকে নিজের থেকে অনেক বেশি উচ্চস্তরের মানুষ বলে মনে করার কারনে তৈরি হয়, অনেক সময় নিজের যৌন সঙ্গীকে হারানোর ভয় থেকে ও তৈরি হয়। যৌনতার দিক থেকে অক্ষম বা একটু কম সক্ষম মানুষেরই এই রকম কল্পনা বা চাওয়া বেশি থাকে, তবে কিছু সক্ষম পুরুষের কাহিনি ও সে পেলো, যারা নিজের চোখের সামনে নিজের স্ত্রীকে অন্য কারো সাথে সেক্স করতে দেখলে মনে মনে লাইভ জীবন্ত সেক্স দেখার মজা পায়। ওরা শারীরিক দিক থেকে স্ত্রীকে পূর্ণ তৃপ্তি দিতে সক্ষম হওয়ার পর ও মনে মনে এই জিনিষকে লালন করে, এটা ওদের যৌন জীবনের উত্তেজনার একটা প্রধান গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রাহাত নিজে ও শারীরিক দিক থেকে বেশ সক্ষম, অন্তত জুলি নিজে কোন অভিযোগ তুলে নাই ওর দিকে, তারপর ও ভিতরে ভিতরে রাহাত যে ওর ভিতরের এই কল্পনাকে কেন্দ্র করেই নিজের যৌন জীবনকে পরিচালিত করতে চায়, সেটা জুলি বুঝতে পারছিলো। কিন্তু রাহাত ওর মনের ভিতরের এই Cukoldress এর উপর ভর করে জুলিকে কোথায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে চায়, সেটা ও জুলি ভেবে বের করতে পারলো না, সেখানে যাওয়ার পর ফিরার রাস্তাটাই বা কি হবে সেটাও জুলি জানে না। এটা রাহাতকে জিজ্ঞাসা করতে বেশ লজ্জা ও ভয় পাচ্ছে সে। লজ্জা, হচ্ছে রাহাত যদি চিন্তা করে যে জুলি নিজেই এই ব্যাপারে বেশী আগ্রহী সেই জন্যেই এটা নিয়ে কথা বলতে চায়, আর ভয় যদি সে জানতে পারে যে সে নিজে যতটুকু চিন্তা করতে না পারে রাহাত ওকে এর চেয়ে ও অনেক বেশি দূরে কোন এক অজানায় নিয়ে যেতে চায়, যেখান থেকে ওদের ফিরে আসার আর কোন রাস্তাই থাকবে না।
ইদানীং বাসায় এসেই জুলি ওর বাগদত্তা স্বামীর দিকে গভীর চোখে তাকিয়ে থাকে, ওর ভিতরটাকে বুঝার চেষ্টা করে, ওকে দিয়ে সে কি করাতে চায় সেটা অনুধাবন করার চেষ্টা করে, ওর কথার ভিতরে কোন অন্য অর্থ নিহিত আছে কি না, সেটা খোঁজার চেষ্টা করে। এইদিকে রাহাত ও মনে মনে জুলিকে লক্ষ্য করছিলো, জুলির এই বিষণ্ণ মনমরা চেহারার পিছনে যে সে দিনের রাতে রেস্টুরেন্টে ঘটে যাওয়া ঘটনাই দায়ী, সেটা মনে করে ভিতরে ভিতরে সে কুণ্ঠিত হয়ে থাকে। জুলি যে ওকে গভীর দৃষ্টিতে পরিমাপ করছে সেটা ভেবে খুব অস্বস্তি হতে লাগলো রাহাতের। রাতে সেক্সের সময় জুলি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলে ও রাহাত ভিতরে ভিতরে খুব অস্থির, ওদের মাঝে কথার এই দেয়াল ভাঙ্গার জন্যে খুবই চিন্তিত রাহাত। নিজে থেকে জুলির সাথে আবারও ওই একই ব্যাপারে কথা বলতে ওর ভয় করছে, জুলি যদি রেগে গিয়ে ওর সাথে সম্পর্ক শেষ করে দেয়ার একটা হুমকি একবার দিয়ে বসে, তাহলে সেটা ওর বাকি সাড়া জীবনের সুখের জন্যে একটা বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে জুলির সাথে বিয়ে পর্যন্ত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা ও রাহাতের জন্যে বেশ কঠিন হয়ে যাবে। মনে মনে রাহাত কোন একটা দারুন ঘটনার জন্যে অপেক্ষা করছিলো, যেটা ওদের মাঝের মনের এই দূরত্বকে আবার কাছে এনে দিবে, তবে সেটার জন্যে বেশি অপেক্ষা করতে হলো না ওদেরকে।
কয়েকদিন পরে এক ছুটির দিনে রাহাতের বড় ভাই সাফাত ওদেরকে দুপুরে বাসায় খাবার জন্যে দাওয়াত দিলো। উদ্দেশ্য চাকরিতে ওর প্রমোশন আর সাথে জুলিকে নিয়ে ওদের বাড়িতে সারাদিনের জন্যে সবাই মিলে সময় কাটানো। রাহাত বুঝতে পারলো আজকেই ওকে জুলির সাথে মনের এই সম্পর্ক আবার তৈরি করে নিতে হবে। জুলি বেশ ভোরে উঠেই গোসল সেরে একদম ফ্রেশ হয়ে গেলো, ওর শরীরে যত সামান্য কিছু লোমের আবির্ভাব হয়েছিলো, সেগুলিকে একদম ঝাঁটা দিয়ে বিদায় করে নিজের সারা শরীর একদম মসৃণ লোমহীন করে ফেললো সে। জুলি ও আজ মনে মনে বেশ উৎফুল্ল আর চঞ্চল হয়ে আছে রাহাতের পরিবারের সাথে সময় কাটানো নিয়ে। দুপুরের বেশ আগেই সকাল ১০ টার দিকে রাহাত আর জুলি গাড়িতে করে রাহাতের বাবার বাড়ি চলে এলো। জুলি সাথে সামান্য কিছু কাপড় ও নিয়ে এলো, যেহেতু ওরা সাড়া দিন থাকার প্ল্যান করে এসেছে। রাহাতের বাবা খুব খুশি হলো জুলিকে দেখে। জুলিকে পাশে নিয়ে বসে ওদের পরিবারে বিভিন্ন গল্প শুনাতে লাগলো রাহাতের বাবা।