স্যন্ধ্যার সময় ফ্লাইওভারের নিচে যাত্রী ছাউনিতে বসে আছি। এই জায়গাটায় সব সময় একটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব থাকে। ফ্লাইওভার হওয়ার পর থেকে নিচ দিয়ে গাড়ি চলাচলও করেনা বেশি। মাঝে মাঝে কিছু মিনিবাস আর লেগুনা ঠক ঠক শব্দ তুলে দ্রুতবেগে চলে যায়। আমি অবশ্য লেগুনার জন্যে বসে নেই। আজকের কেমন উদাস উদাস। ফাকা ফাকা।
পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে দেখি চার্জ নেই, বন্ধ। আরেকটু পরেই ভ্যান ভ্যান করে মশার পাল ছেঁকে ধরবে। আশেপাশে মানুষজন নেই তেমন। উঠে পড়ব বলে ঠিক করেছি, এমন সময় ফ্লাইওভারের মোটা থামের পেছন থেকে মহিলাদের গালাগালি ঝগড়া শব্দ ভেসে এল। উৎসুক হয়ে সেদিকে তাকালাম।
দুজন মধ্যবয়ষ্ক মহিলা, দেখেই মনে হয় বাস্তুহারা।৷ লেবার আর ভিহ্মুক মত মহিলা বয়স পয়তাল্লিশে হয়তো। পড়নে পুরোনো শাড়ি ব্লাউজ । দুজনের হাতে ময়লাযুক্ত মত পলিব্যাগ ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে পিছনে তারা। একটু আগেই জীবনটা পানসে মনে হচ্ছিল। এক বুড়ি মহিলা হাত ঊঁচি কথা বলে আর অন্য মহিলা যপতে বলে, আমি এগিয়ে যাই আর দেখি ঔ মহিলার ব্লাউজ নিচে কিছু অংশ দুদু চামড়া চিমা আর চাপ দুদু তা দেখে শরীর গরম হতে শুরু করল।
এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলাম। না, এই বিষণ্ন সময়ে আশেপাশে নেই কেউ। পকেটে হাত দিয়ে টাকা পয়সা আছে নাকি দেখে নিলাম। পকেট ইদানিং ফাঁকা যাচ্ছে। তারপর ঘাড় কাত করে মহিলা গুলোকে ভালভাবে লক্ষ্য করতে শুরু করলাম, তীক্ষ্মভাবে। সাদামাটা সহজ সরল অপুষ্টিতে ভোগা ছিপছিপে গড়ন।। চকচকে সাদা দাঁত টি লাল পান খাওয়ার জন্য ফুটে উঠছে,। মনে মনে মহিলাটা পছন্দ হল। এসব ব্যাপারে আমার বুক ধুকধুক করে অহেতুক। এবারো তাই হল। মুখে হাসি আর গাম্ভীর্যের ভাব ফুটিয়ে খানিকটা কাঁপা কাঁপা গলায় চেঁচালাম,
– ঝগড়াঝাটি থামাতে বললাম কি হয়েছে খাল্মা
তারা ঝগড়া থামিয়ে ফিরে তাকাল উৎসুক চোখে। আমি হাত তুলে বললাম কি হয়েছে কাছে তারা আসলে,, তারা বলল যে একজনের সাথে কথা বলবেন ত কার বলবা বলো , আমি একজনকে। ইশারা করলাম সেই মহিলা পাশে মহিলা কে গালি দিলে বলে শর মাগি দূরে গিয়ে গুদ মার, এতে আমার আর বুঝতে বাকি রইলনা, সে হতাশ করতে চলে গেলো তার খারাপই লাগবে, কিন্তু আমার তো আর কি করা!
সে মহিলা দিকে তাকাতে বলো উঠলো
– বাপু আমি গরিব মানুষ
– আপনি যা দেন তাতে খুশি
ভুবন ভোলানো পান খাওয়া মুখে লাজুক হাসি দিয়ে বলল।
সবুজের মত সাদা শেপে রং এ পুরানো শাড়ি, মেটে রং ব্লাউজে হাতা দেখা যায়।
আমিও করুণ চোখ করে দেকলাম। তবে মনে হচ্ছিল এরকম ভালো হবে। সুন্দরী দিয়ে কি, উত্তেজনা নেশা কিছু মানে না হয়তো সবসময় মানে, ঔ মহিলা আস্তে আস্তে নিচে ব্যাগ থেকে পান বার করতাছে মাথা নিচু করে তখনো আমার পাশে বসা পরে বলি,
– নাম কি খাল্মা
কোমল কাঁধে হাত রেখে নরম গলায় জিজ্ঞেস করলাম।
– রাজিয়া খাতুন
মিনমিনিয়ে জবাব দিল মহিলা
– আচ্ছা.. জায়গা কই থাকেন কই?
অবশেষে কাজের কথায় আসায় স্বস্তি ফিরে এসেছে মহিলার মুখে। আর মুখে নিয়ে বলে
– হেইপাশে জাগা আছে। কুনো সমস্যা নাই। আপনে আমার পিছে পিছে আইবেন।
আঙুল তুলে রাস্তার অন্যপাশের বিশাল টিনের বেড়ার পিছন দিকে নির্দেশ করল।
– রাইক্ষা দিবেন ত পরে মোবাইল টোবাইল সব!
আমি কঠিন গলায় বললাম।
– এল্লা, কি কন! আমারে এইহানে প্রতিদিন স্যন্ধ্যার পর রাতেও পাইবেন। আর যাই হক, এইসব করিনা। গরিব মানুষ ওসব বুজিনা টাহা পাইলে আমগে জীবন চলে
মহিলা কন্ঠে কিছুটা দুঃখী ভাব।
– আচ্ছা। কন্ডম আছে খাল্মা
– হ। কমদামী আছে দামিটা নাই হেইডাই দিমু। আর বলে আপনে খাল্মা ডাকে কেন?
পরে বলি মায়ের বয়সি তাই,,
পান চিবুতে চিবুতে শাড়ি আঁচল ঠিক করে অনন্ধকারে ভালো কিছু দেখা গেলো না।। পরে সেই ফাঁকা রাস্তায় মহিলার পিছু পিছু হেঁটে হেঁটে তার ডেরার দিকে যেতে যেতে কথা বলছিলাম,
– তোর বয়স কত খাল্মা,
– হেসে হেসে বলে পঞ্চাশ মত,
– দেখে মনে হয়না বয়স পয়তাল্লিশ বেশি হবে।
– কোন পাশে থাকেম
– ওইপাশে।
বলে আঙুল দিয়ে ফ্লাইওভারের পাশের বস্তি নির্দেশ করল খাল্মা
– ডেইলি ঔসব করেন
– হ্যা
-কয়জন পান লোক
– এইত্তো এক দুজন, কোনদিন পাইনা হুদাই ঘুরি। বসে থাকি
বলে খিলখিল করে হেসে ফেলল
– অন্য কাম কাজ করেন কি।
টিনের বেড়ার পেছনে পৌঁছে গেলাম কথা বলতে বলতে। ফ্লাইওভার তৈরির সময় এখানে নির্মাণ শ্রমিকেরা থাকত এবং রড সিমেন্টও এখানেই রাখা হতো। বেশ বড়সড় এলাকা, লম্বা টিনের বেড়ায় ঢাকা। জায়গায় জায়গায় ঝোপঝাড়ে খুপরির মত। খুপড়ির সামনে পর্দা দেয়া। কোনো দরজা নাই আশেপাশের কয়েকটি খুপড়ি থেকে খসখস শব্দ হচ্ছে। একটি খুপড়ির দিকে এগিয়ে গেল,খাল্মা
– আহেন এইডায়।
–, এগুলা বেশি ছোড, কোন চিপাচাপা নাই?
– ওইপাশে বেড়ার লগে ঐ ইটের ঘড়টা দেখছেন? হেইটার পিছে যাইবেন?
– হু
– আপনে যান, আমি ফুটকা নিয়া আহি।
– কেন, ব্যাগে রাখেন নাই?
– না বাপু সারাদিন ভিহ্মা করে বাসা দিকে যাইনাই তাই রাখি নাই এহন আনব।।
আমি আস্তে আস্তে একটা ছোট ঘরটার পেছনের দেয়াল আর টিনের বেড়ার মাঝে গিয়ে ঢুকলাম। আশেপাশে কেউ নেই। ঘরের পেছনে সেফটি ট্যাংকের উঁচু স্লাভ। জায়গাটা বেশ বড়সড়। আমার পছন্দ হল।
মিনিটখানেক পর শুকনো পাতায় খসখস শব্দ তুলে পৌঁছাল খাল্মার হাতে কতগুলি কন্ডম। কোন ব্রান্ডনেম দেখতে পেলাম না। সাদা প্যাকেট, হয়তো সরকারি জিনিস।
-এত কন্ডম কিনেন কই থেকে,
– হেসে খাল্মা বলে এগুলো ফ্রী দেয়
স্যাস্থ্যকর্মী আপারা হাপ্তাহে একবার করে অাসে দশ থেকে বিশ টা মত দেয়,।।।
– আইবোনাতো এইহানে কেউ?
– না, এহানে আহেনা কেউ।
– তাইলে আমরা যে আইলাম, কেউ কিছু কইবনা?
– না, আমাদের আপা এহানের ইজারা নিছে।
নির্লিপ্ত গলায় দাঁতে কেটে কন্ডমের প্যাকেট খুলতে খুলতে বলল ।
অবাক হলাম আমি।
– আরে বাপু আমগো এখনে সবাই গরীব তাই এ বেবসা পেটে দায় করে।মোটামোটি সব বস্তি এলাকার একটা অংশ দেহ ব্যবসায় করে আর কিছু না বলে চুপ মেরে গেলাম।
সে সাথে শাড়ি আঁচল সরে নিলো।
একটু হাত বাড়াতে, সে কাঁছে আসলো।
চিমা দুদু টিপি, ব্লাউজ উপরে আর খাল্মা বলে
– পেন্ট খুলো বাপু
– আমি স্লাভ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বেল্ট খুলে জিন্স আর জাঙ্গিয়াখানা হাঁটু পর্যন্ত নামিয়ে আবার স্লাভের উপর পাছা ছড়িয়ে বসে পড়লাম।
– পুরাটা খুইল্লা ফেলেন, এহানে কেউ আইবনা।